ইউরোর ট্রেডের বিশ্লেষণ এবং ট্রেডিংয়ের পরামর্শ
দিনের দ্বিতীয়ার্ধে যখন MACD সূচকটি শূন্যের উল্লেখযোগ্য নিচে নেমে গিয়েছিল তখন এই পেয়ারের মূল্য 1.0245 এর লেভেল টেস্ট করে, যা এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করেছিল। এই কারণে, আমি ইউরো বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিইনি। এর কিছুক্ষণ পরে, 1.0245 লেভেল আবার টেস্ট করা হয়, সেসময় MACD সূচকটি ওভারসোল্ড অঞ্চলে ছিল, যার ফলে পরিকল্পনা #2 প্রয়োগ করে ইউরো ক্রয় হয় এবং এতে এই পেয়ারের মূল্যের 50 পিপের বেশি বৃদ্ধি ঘটে।
ট্রেডাররা মার্কিন বাণিজ্য নীতির সম্ভাব্য পরিবর্তনের দিকে মনোনিবেশ করছে। ট্রাম্পের ধাপে ধাপে শুল্ক আরোপ নিয়ে স্পষ্ট কোন বিবৃতি না আসায় অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, যা ইউরোকে শক্তিশালী করেছে এবং ডলারকে দুর্বল করেছে। তদুপরি, মার্কিন প্রডিউসার প্রাইস ইনডেক্স বা উৎপাদক মূল্য সূচক (PPI) প্রত্যাশার চেয়ে দুর্বল হওয়ায় ডলার আরও চাপের মুখে পড়েছে। সামগ্রিক অস্থিরতা সত্ত্বেও, ইউরো অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর কারণে চাপের মধ্যে রয়েছে, যেমন ধীর প্রবৃদ্ধি এবং নিম্ন মুদ্রাস্ফীতি। তবে, বাণিজ্য নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত স্বল্পমেয়াদী কারণগুলো সাময়িকভাবে ইউরোকে ডলারের তুলনায় কিছুটা সুবিধা দিতে পারে। এছাড়াও, ট্রেডাররা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছে, যা এই পেয়ারের মূল্যের অতিরিক্ত ওঠানামা সৃষ্টি করতে পারে।
আজ প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনগুলোর মধ্যে রয়েছে ইতালির কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) এবং জার্মানির হোলসেল প্রাইস ইনডেক্স বা পাইকারি মূল্য সূচক, যা ইউরোর ক্রেতাদের উল্লেখযোগ্য সমর্থন দেওয়ার সম্ভাবনা কম। ইতালির CPI ভোক্তা মূল্য সূচকের প্রবণতার ওপর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করবে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ নির্দেশ করতে পারে। যদি এই প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার চেয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়, তবে এটি ইসিবি-কে সুদের হার সংক্রান্ত নীতিমালা সমন্বয় করার চাপ বাড়াতে পারে, যা পরোক্ষভাবে ইউরোকে সমর্থন করবে। অন্যদিকে, জার্মানির পাইকারি মূল্য সূচক উৎপাদক পর্যায়ে সরবরাহ এবং চাহিদার ব্যাপারে আলোকপাত করবে। পাইকারি মূল্য সূচকের পতন মন্থর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করতে পারে, যা ইউরোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি উল্লেখ করা গুরুত্বপূর্ণ যে ইউরোর মূল্য মার্কিন অর্থনৈতিক নীতিমালার দ্বারা প্রভাবিত হয়, যেখানে ফেডারেল রিজার্ভের পদক্ষেপগুলো ইউরোর মূল্যের গতিশীলতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
দৈনিক কৌশল হিসেবে, আমি মূলত পরিকল্পনা #1 এবং পরিকল্পনা #2 বাস্তবায়নের ওপর বেশি মনোযোগ দেব।
বাই সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: আজ যখন মূল্য 1.0344-এর লেভেলে বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রায় 1.0309-এর (চার্টে সবুজ লাইন দ্বারা চিহ্নিত) লেভেলে পৌঁছাবে, তখন আপনি ইউরো কিনতে পারেন। মূল্য 1.0344 পয়েন্টে গেলে, আমি লং পজিশন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি এবং এন্ট্রি পয়েন্ট থেকে 30-35 পিপসের মুভমেন্টের উপর নির্ভর করে বিপরীত দিকে ইউরোর শর্ট পজিশন ওপেন করার পরিকল্পনা করছি। দিনের প্রথমার্ধে শুধুমাত্র আসন্ন অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হলেই ইউরোর মূল্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা যেতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: কেনার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের উপরে রয়েছে এবং শূন্যের উপরে উঠতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারসোল্ড জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.0290-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো কিনতে যাচ্ছি। এটি এই ইন্সট্রুমেন্টের মূল্যের নিম্নগামী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে ঊর্ধ্বমুখী করবে। আমরা 1.0309 এবং 1.0344-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দর বৃদ্ধির আশা করতে পারি।
সেল সিগন্যাল
পরিকল্পনা #1: EUR/USD পেয়ারের মূল্য 1.0290 এর লেভেলে (চার্টে লাল লাইন) পৌঁছানোর পরে ইউরো বিক্রি করার পরিকল্পনা করছি। লক্ষ্যমাত্রা হবে 1.0253-এর লেভেল, যেখানে মূল্য পৌঁছালে আমি অবিলম্বে বিপরীত দিকে ইউরোর লং পজিশন ওপেন করতে যাচ্ছি (এই লেভেল থেকে 20-25 পিপস বিপরীতমুখী মুভমেন্টের আশা করছি)। যেকোন সময় এই পেয়ারের উপর চাপ ফিরে আসতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ: বিক্রি করার আগে, নিশ্চিত করুন যে MACD সূচকটি শূন্যের নিচে রয়েছে এবং সবেমাত্র নিচের দিকে যেতে শুরু করেছে।
পরিকল্পনা #2: MACD সূচকটি ওভারবট জোনে থাকাকালীন সময়ে 1.0309-এর লেভেলে মূল্যের পরপর দুটি টেস্টের ক্ষেত্রেও আমি আজ ইউরো বিক্রি করতে যাচ্ছি। এটি এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনাকে সীমিত করবে এবং বাজারদরকে বিপরীতমুখী করে নিম্নমুখী করবে। আমরা 1.0290 এবং 1.0253-এর বিপরীতমুখী লেভেলের দিকে এই পেয়ারের দরপতনের আশা করতে পারি।
চার্টে কী আছে:
- হালকা সবুজ লাইন: এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট ক্রয়ের জন্য এন্ট্রি প্রাইস।
- গাঢ় সবুজ লাইন: টেক-প্রফিট (TP) সেট করতে পারেন বা ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা, কারণ এই লেভেলের উপরে আরও দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই।
- হালকা লাল লাইন: এই ট্রেডিং ইন্সট্রুমেন্ট বিক্রয়ের জন্য এন্ট্রি প্রাইস।
- গাঢ় লাল লাইন:টেক-প্রফিট (TP) সেট করতে পারেন বা ম্যানুয়ালি মুনাফা নির্ধারণ করার জন্য সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা, কারণ এই লেভেলের নিচে আরও দরপতনের সম্ভাবনা নেই।
- MACD সূচক: মার্কেটে এন্ট্রি করার সময়, ওভারবট এবং ওভারসোল্ড জোন চিহ্নিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন ফরেক্স ট্রেডারদের জন্য গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ:
- মার্কেটে এন্ট্রির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রতিবেদন প্রকাশের আগে, মূল্যের তীব্র ওঠানামা এড়াতে ট্রেডিং না করাই উচিত।
- সংবাদ প্রকাশের সময় ট্রেড করলে, ঝুঁকি কমাতে সর্বদা স্টপ-লস অর্ডার সেট করুন।
- স্টপ-লস অর্ডার বা মানি ম্যানেজমেন্টের কৌশল ছাড়াই ট্রেড করলে আপনার ডিপোজিট দ্রুত শেষ হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে বড় ভলিউমে ট্রেড করার সময়।
- সফলভাবে ট্রেড করার জন্য ট্রেডিংয়ের একটি স্পষ্ট পরিকল্পনা থাকতে হবে, ঠিক যেমনটি আমি এই নিবন্ধে প্রদর্শন করেছি। বর্তমান বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে ট্রেডিংয়ের স্বতঃস্ফূর্ত সিদ্ধান্ত দৈনিক ভিত্তিতে ট্রেড করা যেকোন নতুন ট্রেডারের জন্য সহজাতভাবে লোকসান বয়ে নিয়ে আসতে পারে।